Thursday, July 10, 2014

বাঙালী করেছে ভগবান

ও মনো রে, বাঙালী করেছে ভগবান রে...

আমি যদি জার্মান হতাম
বোতল বোতল বিয়ার খেতাম,
আবার কনসার্টে পিয়ানো শুনতাম
দেখতিস আমার মান রে।

আমি যদি ফ্রেঞ্চ হতাম
চিজ রুটি আর ওয়াইন খেতাম,
গায়ে পার্ফিউম মেখে করতাম
সংস্কৃতির ভান রে।

আমি যদি ইটালিয়ান হতাম
পিৎজা কাপুচিনো খেতাম,
ভূমধ্য সাগরে আবার করতাম
আমি স্নান রে।

আমি যদি বৃটিশ হতাম
কাউন্টি লীগে চিকেন খেতাম,
আবার রানীর থেকে নাইটহুড পেতাম
করতাম হুইস্কি পান রে।

আমি যদি স্প্যানীশ হতাম
ফ্ল্যামিঙ্গো গিটার বাজাইতাম,
বুল ফাইটিং করতাম দেখতি
মাতাজলের জান রে।

আমি যদি আমেরিকান হতাম
দাদাগিরি খুব ফলাতাম,
আবার স্যাংশানের ভয় দেখিয়ে
মলে দিতাম কান রে।

বঙ্গদেশে জন্ম হলো
বাঙালী হয়ে থাকতে হলো,
পেটে ভীষণ ক্ষিধা তবু
মুখে বাউল গান রে।
বাঙালী করেছে ভগবান রে...

সেই ফুলের দল

রাবেয়া কি রুখসানা, ঠিক তো মনে পড়েনা
অস্থির এ ভাবনা, শুধু করে আনাগোনা,
ফেলে আসা দিন তার মিছে মনে হয়, নামে কিবা আসে যায়।
সোহাগে আদরে জানি রেখেছিল কেউ এই নাম...

আব্বা না আপা নাকি, কারো মনে পড়ে তা-কি,
তোমরা তা জান নাকি, সময় দিয়েছে ফাঁকি,
অভিমানে সে মেয়েটি গেছে হারিয়ে, বুকে ভরসা নিয়ে।
সীমান্ত পেরিয়ে সে এসেছিল ছেড়ে তার গ্রাম...

জানি সে কোথায়, এই শহরের কোন বাগানে সে হয়ে আছে ফুল,
প্রতি সন্ধ্যায়, পাঁপড়ি মেলে দিয়ে সে আবার ভোরে ঝরা বকুল...

এই মেয়েটির মত, আরেকটি মেয়ে সে-ত
সন্ধ্যাপ্রদীপ দিত, যত্নে গান শোনাত,
হালকা পায়ে বেড়াত, বেণী দুলিয়ে, কে যে নিল ভুলিয়ে।
খেলার সাথীরা তার খুঁজতে আসেনা আর রোজ...

লক্ষী নামের মেয়ে, আজও তার পথ চেয়ে
ফেলে আসা তার গাঁয়ে, মা কাঁদে মুখ লুকিয়ে,
সন্ধ্যেবেলায় শাঁখ বাজেনাতো আর, এতে আছে কী বলার।
আজও কেউ জানেনা তো কোথায় সে হয়েছে নিখোঁজ...

লক্ষী রুখসানারা, আরও যত ঘরছাড়া
ত্রস্ত দিশেহারা, তখনই যাদুকরেরা,
নিমেষে বানিয়ে দেয় বাগানের ফুল, ঠিক নির্ভুল।
এভাবে মেয়েরা সব একে একে ফুল হয়ে যায়...

নতুন বাগানে এসে, নিজেকে না ভালবেসে
ফুলের দলেরা শেষে, কথা বলে হেসে হেসে,
পদ্ম-গোলাপ-জুঁই, চম্পা-চামেলী, উলো টগর-শেফালী।
পোড়ারমুখীরা তোরা ফুল হয়ে রয়ে গেলি হায়...

Wednesday, July 9, 2014

Gloomy Sunday

Sunday is gloomy,
My hours are slumber-less
Dearest the shadows
I live with are numberless.

Little white flowers
Will never awaken you
Not where the black coach
Sorrow has taken you.

Angels have no thoughts
Of ever returning you
Would they be angry
If I thought of joining you?

Gloomy is Sunday,
With shadows I spend it all
My heart and I
Have decided to end it all.

Soon there'll be candles
And prayers that are said I know
But let them not weep
Let them know that I'm glad to go.

Death is no dream
For in death I'm caressin' you
With the last breath of my soul
I'll be blessin' you.

Dreaming, I was only dreaming
I wake and I find you asleep
In the deep of my heart here
Darling I hope.

That my dream never haunted you
My heart is tellin' you
How much I wanted you
Gloomy Sunday.

Blackbird's Song

Pack your things
Leave somehow
Blackbird song
Is over now.
Mouths are dry
River runs
Hands are tied
Preachers son.

Pack your things
Leave somehow
Blackbird song
Is over now.
Don't be scared
I'm still here
No more time
For crying dear.

মেঘ থম থম করে

মেঘ থম থম করে কেউ নেই
জল থই থই করে কিছু নেই
ভাঙনের যে নেই পারাপার
তুমি আমি সব একাকার
মেঘ থম থম করে কেউ নেই।

কোথায় জানিনা, মেঘ ছিল যে কোথায়?
সীমানা পেরিয়ে সব মিশে যেতে চায়
মেঘ থম থম করে কেউ নেই
জল থই থই করে কিছু নেই
আঁধারের যে নেই পারাপার
মেঘ থম থম করে কেউ নেই।

পুরানো সব নিয়ম ভাঙে অনিয়মের ঝড়
ঝড়ো হাওয়া ভেঙে দিল মিথ্যে তাসের ঘর।
নুতন মাটিতে আসে ফসলেরই কাল
আঁধার পেরিয়ে আসে আগামী সকাল।

রাত ঘুম ঘুম ভোরে জাগে ঐ
রোদ ঝলমল করে দেখ ঐ
বাতাসের যে নেই হাহাকার
পথ নেই যে পথ হারাবার
রাত ঘুম ঘুম ভোরে জাগে ঐ।

দুপুরের খামোকা খেয়াল

দুপুরের খামোকা খেয়াল
ভাঙা তাক পুরনো দেয়াল,
খুঁজে পাওয়া বই জানতে চায়
বান্ধবী আছে কে কোথায়,
ধূলো লাগা চেনা বই সব
হাতড়ায় কেনা শৈশব,
ধূলো লাগা চেনা বই সব
ভালবাসে কে না শৈশব,
এক আকাশ ভর্তি অভিমান
কোনদিন গাইবো না যে গান।

খুঁজে পাওয়া বই, রাত জাগা চোখ
আমি পড়বই, যন্ত্রণা হোক।

কখনোই পাত্তা দাওনি যাকে
গোপনীয় আজও বইয়ের ফাঁকে
ভালবাসা বিবর্ণ পালকে...

ভাল থেকো শুভ জন্মদিন
লেখাগুলো আজও অমলীন,
বেখেয়ালে খুঁজে পাওয়া বই
ভাল আর থাকতে দিচ্ছে কই,
বৃষ্টির জলে ধোয়া ছাদ
ভুল করে ছুঁয়ে দেওয়া হাত,
এখনো কি ভুল করে তুই
একা একা ভাববো না কিছুই,
শুধু আদরের ছিল অঙ্গীকার
যদি একটুও, আর একটিবার।

একদিন গোধূলী আলোকে
খেলেছিল উদাসী বালকে
সেদিনের সোনালী পালকে...

যে সবে বঙ্গেত জন্মি

কিতাব পড়িতে যার নাহিক অভ্যাস।
সে সবে কহিল মোতে মনে হাবিলাষ।।…
তে কাজে নিবেদি বাংলা করিয়া রচন।
নিজ পরিশ্রম তোষি আমি সর্বজন।।
আরবী ফারছি শাস্ত্রে নাই কোন রাগ।
দেশী ভাষে বুঝিতে ললাটে পুরে ভাগ।।
আরবী ফারছি হিন্দে নাই দুইমত।
যদি বা লিখয়ে আল্লা নবীর ছিফত।।…
যেই দেশে যেই বাক্যে কহে নরগণ।
সেই বাক্য বুঝে প্রভূ আপে নিরঞ্জন।।
সর্ববাক্য বুঝে প্রভূ কিবা হিন্দুয়ানী।
বঙ্গদেশী বাক্য কিবা যত ইতি বাণী।।…
মারফত ভেদে যার নাহিক গমন।
হিন্দুর অক্ষর হিংসে সে সবের গণ।।
যে সবে বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী।
সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।।
দেশী ভাষা বিদ্যা যার মনে ন জুয়ায়।
নিজ দেশ ত্যাগী কেন বিদেশ ন যায়।।
মাতা পিতামহ ক্রমে বঙ্গেত বসতি।
দেশী ভাষা উপদেশ মনে হিত অতি।।

মোরা একটি ফুলকে

মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি
মোরা একটি মুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি।
যে মাটির চির মমতা আমার অঙ্গে মাখা
যার নদী জল ফুলে ফুলে মোর স্বপ্ন আঁকা।
যে দেশের নীল অম্বরে মন মেলছে পাখা
সারাটি জনম সে মাটির টানে অস্ত্র ধরি।
মোরা নতুন একটি কবিতা লিখতে যুদ্ধ করি―
মোরা নতুন একটি গানের জন্য যুদ্ধ করি
মোরা একখানা ভালো ছবির জন্য যুদ্ধ করি
মোরা সারা বিশ্বের শান্তি বাঁচাতে আজকে লড়ি।

যে নারীর মধু প্রেমেতে আমার রক্ত দোলে
যে শিশুর মায়া হাসিতে আমার বিশ্ব ভোলে
যে গৃহ কপোত সুখ স্বর্গের দুয়ার খোলে
সেই শান্তির শিবির বাঁচাতে শপথ করি।।
মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি
মোরা একটি মুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি।

যে ছিল আমার

যে ছিল আমার স্বপনচারিণী
তারে বুঝিতে পারি নি।
দিন চলে গেছে খুঁজিতে খুঁজিতে॥
শুভক্ষণে কাছে ডাকিলে,
লজ্জা আমার ঢাকিলে গো,
তোমারে সহজে পেরেছি বুঝিতে॥
কে মোরে ফিরাবে অনাদরে,
কে মোরে ডাকিবে কাছে,
কাহার প্রেমের বেদনায় আমার মূল্য আছে,
এ নিরন্তর সংশয়ে হায় পারি নে যুঝিতে
আমি তোমারেই শুধু পেরেছি বুঝিতে॥

দিনগুলি মোর

দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইল না--
সেই-যে আমার নানা রঙের দিনগুলি।
কান্নাহাসির বাঁধন তারা সইল না--
সেই-যে আমার নানা রঙের দিনগুলি॥
আমার প্রাণের গানের ভাষা
শিখবে তারা ছিল আশা--
উড়ে গেল, সকল কথা কইল না--
সেই-যে আমার নানা রঙের দিনগুলি॥
স্বপন দেখি, যেন তারা কার আশে
ফেরে আমার ভাঙা খাঁচার চার পাশে--
সেই-যে আমার নানা রঙের দিনগুলি।
এত বেদন হয় কি ফাঁকি।
ওরা কি সব ছায়ার পাখি।
আকাশ-পারে কিছুই কি গো বইল না--
সেই-যে আমার নানা রঙের দিনগুলি॥

শাসক

শাসক যে রঙের-ই হোক ভয়ানক।
তাঁর চোখ সবদিকে থাকে
কে তার সমর্থক, কে তার বিরোধী
তার খবর রাখে।

তার হাতে সন্ত্রাস
তুরুপ, ঠেক্কা তাস
তার হাতে ভাঁড়ারের চাবি।
তার দল জোরদার
দলেরই তো সরকার
বিরোধীর আছে শুধু দাবি।

দাবি নিয়ে এলে কেউ
দল তুলে বড়ো ঢেউ
আইন-রক্ষী করে চুপ।
সংবাদে কতটা
অনুমতি যতটা
নৈপথ্যে শাসকের রূপ।

রূপের বাহারে ঢঙ
লাল নীল রঙ-চঙ
সবুজ বা হলুদ নিশান।
যে রঙেরই সেটা হোক
শাসকের দু’টি চোখ
ছুরিতেই দেবে শুধু শান।