Monday, December 17, 2012

Hoist the Colors

The king and his men,
Stole the queen from her bed,
And bound her in her bones.
The seas be ours,
and by the powers,
Where we will, we'll roam.

Yo, ho, all hands,
Hoist the colours high.
Heave ho, thieves and beggars,
Never shall we die!

Yo, ho, haul together,
Hoist the colours high.
Heave ho, thieves and beggars,
Never shall we die!

Some men have died,
And some are alive,
And others sail on the sea
With the keys to the cage.
And the Devil to pay,
We lay to Fiddler's Green!

The bell has been raised
From its watery grave,
Do you hear its sepulchral tone?
A call to all,
Pay heed the squall
And turn your sail to home!

Sunday, December 2, 2012

বর্ষার দিনে

এমন দিনে তারে বলা যায়,
এমন ঘনঘোর বরিষায়!
এমন মেঘস্বরে বাদল-ঝরঝরে
তপনহীন ঘন তমসায়।

সে কথা শুনিবে না কেহ আর,
নিভৃত নির্জন চারি ধার।
দুজনে মুখোমুখি গভীর দুখে দুখী,
আকাশে জল ঝরে অনিবার।
জগতে কেহ যেন নাহি আর।
সমাজ সংসার মিছে সব,
মিছে এ জীবনের কলরব।

কেবল আঁখি দিয়ে আঁখির সুধা পিয়ে
হৃদয় দিয়ে হৃদি অনুভব।
আঁধারে মিশে গেছে আর সব।

বলিতে বাজিবে না নিজ কানে,
চমক লাগিবে না নিজ প্রাণে।
সে কথা আঁখিনীরে মিশিয়া যাবে ধীরে

এ ভরা বাদলের মাঝখানে।
সে কথা মিশে যাবে দুটি প্রাণে।
তাহাতে এ জগতে ক্ষতি কার
নামাতে পারি যদি মনোভার?
শ্রাবণবরিষনে একদা গৃহকোণে
দু কথা বলি যদি কাছে তার
তাহাতে আসে যাবে কিবা কার?
আছে তো তার পরে বারো মাস,
উঠিবে কত কথা কত হাস।

আসিবে কত লোক কত-না দুখশোক,
সে কথা কোন্‌খানে পাবে নাশ।
জগৎ চলে যাবে বারো মাস।

ব্যাকুল বেগে আজি বহে বায়,
বিজুলি থেকে থেকে চমকায়।

যে কথা এ জীবনে রহিয়া গেল মনে
সে কথা আজি যেন বলা যায়
এমন ঘনঘোর বরিষায়।

Friday, November 30, 2012

The Times They Are A-Changin'

Come gather 'round people
Wherever you roam
And admit that the waters
Around you have grown
And accept it that soon
You'll be drenched to the bone
If your time to you
Is worth savin'
Then you better start swimmin'
Or you'll sink like a stone
For the times they are a-changin'.

Come writers and critics
Who prophesize with your pen
And keep your eyes wide
The chance won't come again
And don't speak too soon
For the wheel's still in spin
And there's no tellin' who
That it's namin'
For the loser now
Will be later to win
For the times they are a-changin'.

Come senators, congressmen
Please heed the call
Don't stand in the doorway
Don't block up the hall
For he that gets hurt
Will be he who has stalled
There's a battle outside
And it is ragin'
It'll soon shake your windows
And rattle your walls
For the times they are a-changin'.

Come mothers and fathers
Throughout the land
And don't criticize
What you can't understand
Your sons and your daughters
Are beyond your command
Your old road is
Rapidly agin'
Please get out of the new one
If you can't lend your hand
For the times they are a-changin'.

The line it is drawn
The curse it is cast
The slow one now
Will later be fast
As the present now
Will later be past
The order is
Rapidly fadin'
And the first one now
Will later be last
For the times they are a-changin'.

Thursday, November 29, 2012

আজ রাতে কোন রূপকথা নেই

চাঁদ মামা আজ বড্ড একা বড় হয়েছি আমি,
রোজ রাতে আর হয়না কথা, হয়না নেওয়া হামি।।

রোজ রাতে আর চাদের বুড়ি কাটেনা চরকা রোজ,
ও বুড়ি তুই আছিস কেমন? হয়না নেয়া খোঁজ।

কোথায় গেল সেই রূপকথার রাত হাজার গল্প শোনা
রাজার কুমার কোটালকুমার পক্ষীরাজ সে ঘোড়া,
কেড়ে নিলো কে সে আজব সময় আমার কাজলা দিদি
কে রে তুই কোন দৈত্য দানব সব যে কেড়ে নিলি..

কে রে তুই? কে রে তুই??
সব সহজ শৈশব কে বদলে দিলি
কিছু যান্ত্রিক বর্জ্যে
তুই কে রে তুই??
যত বিষাক্ত প্রলোভনে আমায় ঠেলে দিলি
কোন এক ভুল স্রোতে..

আলাদিন আর যাদুর জিন আমায় ডাকছে শোনো,
ব্যস্ত আমি ভীষণ রকম সময় তো নেই কোন।

আলিবাবার দরজা খোলা চল্লিশ চোর এলে
সিন্দাবাদটা একলা বসে আছে সাগর তীরে,
সময়টা আজ কেমন যেন বড় হয়ে গেছি আমি
তারা গুলো আজ ও মেঘের আড়াল কোথায় গিয়ে নামি..

Friday, November 23, 2012

মুখোশ

তোমাকে যেমন ভাবছে সবাই আসলে কি তুমি তাই
আমি তো আমার মুখোমুখি হলে দারুন লজ্জা পাই।

এই যে তোমার স্বচ্ছ দু’চোখ সবেতেই সাবলীল
অন্তরে আর বাহিরে তোমার আদৌ কি আছে মিল।

আমার কিন্তূ অগণিত পাপ যত্নে লুকিয়ে রাখা
অথচ দেখেছো মুখখানা কত পবিত্রতায় মাখা।

হাসিতে তোমার সঞ্চিত আজ যতখানি সরলতা
মুখের বুলিতে বিদ্রোহ আর সোচ্চার মানবতা।

যা কিছু মহান সুন্দর তুমি রপ্ত করেছো বেশ
তোমার মাঝেই শত সুন্দর করে যেন সমাবেশ।

কত সাধনায় মিথ্যে মুখোশে মুগ্ধ করেছো বটে
কানে কানে তবু গোপন কথাটি বলে যাই অকপটে।

বন্ধু আমাকে বানাতে কিন্তূ পারোনি আহাম্মক
মনের ভেতরে দেখেছি তোমার লোভী চক্‌চকে চোখ।

তোমাকে চিনেছি কেননা জানো তো রতনে রতন চেনে
আমিও নষ্ট ঘুণাক্ষরেও বুঝবে না দেখে শুনে।

যত সাধনায় মুগ্ধ করেছি মানুষের অন্তর
হৃদয়ে আমার ছিটেফোঁটা যদি থাকতো সে সুন্দর।

নিজেকে তখন মুগ্ধ চোখেই দেখতাম অবিরত
তোমার আমার হৃদয় হতো না মাকাল ফলের মত।

হিসেবের ভুল তোমার আমার মুখোশটা খুলে দিলে
ধরা পড়ে যাওয়া থতমত মন লজ্জিত ঢোক গেলে।

তাকালে যখন তোমার দু’চোখে সরাসরি সোজাসুজি
বন্ধু তোমার বিন্দুমাত্র লজ্জা করেনি বুঝি।

নিজেকে করেছো আড়াল মানুষ ঘেন্না করেনা যেন
বন্ধু তোমার নিজেকে কখনও ঘেন্না করেনি কেন?

Sunday, November 4, 2012

চল রাস্তায় সাজি ট্রাম লাইন

চল রাস্তায় সাজি ট্রাম লাইন আর কবিতায় শুয়ে কাপ্লেট
আহা উত্তাপ কত সুন্দর তুই থার্মোমিটার -এ মাপলে,
হিয়া টুপটাপ জিয়া নস্টাল, মিঠে কুয়াশায় ভেজা আস্তিন
আমি ভুলে যাই কাকে চাইতাম আর তুই কাকে ভালোবাসতি।

প্রিয় বন্ধুর পাড়া নিঝ্ঝুম চেনা চাঁদ চলে যায় রিকশায়
মুখে যা খুশি বলুক রাত্তির শুধূ চোখ থেকে চোখে দিক সায়,
পায়ে ঘুম যায় একা ফুটপাথ, ওড়ে জোছনায় মোড়া প্লাস্টিক
আমি ভুলে যাই কাকে চাইতাম আর তুই কাকে ভালোবাসতি।

পোষা বালিশের নিচে পথ-ঘাট, যারা সস্তায় ঘুম কিনতো
তারা কবে ছেড়ে গেছে বন্দর , আমি পাল্টে নিয়েছি রিং টোন,
তবু বারবার তোকে ডাক দিই একি উপহার নাকি শাস্তি
আমি ভুলে যাই কাকে চাইতাম আর তুই কাকে ভালোবাসতি।

Wednesday, October 24, 2012

ভালোবেসে সখী

ভালোবেসে, সখী, নিভৃতে যতনে
আমার নামটি লিখো-- তোমার
মনের মন্দিরে।

আমার পরানে যে গান বাজিছে
তাহার তালটি শিখো-- তোমার
চরণমঞ্জীরে॥

ধরিয়া রাখিয়ো সোহাগে আদরে
আমার মুখর পাখি-- তোমার
প্রাসাদপ্রাঙ্গণে॥

মনে ক'রে সখী, বাঁধিয়া রাখিয়ো
আমার হাতের রাখী-- তোমার
কনককঙ্কণে॥

আমার লতার একটি মুকুল
ভুলিয়া তুলিয়া রেখো-- তোমার
অলকবন্ধনে।

আমার স্মরণ শুভ-সিন্দুরে
একটি বিন্দু এঁকো-- তোমার
ললাটচন্দনে।

আমার মনের মোহের মাধুরী
মাখিয়া রাখিয়া দিয়ো-- তোমার
অঙ্গসৌরভে।

আমার আকুল জীবনমরণ
টুটিয়া লুটিয়া নিয়ো-- তোমার
অতুল গৌরবে॥

ভালো যদি বাস সখী

ভালো যদি বাস, সখী, কী দিব গো আর?
কবির হৃদয় এই দিব উপহার।

এত ভালোবাসা, সখী, কোন্‌ হৃদে বলো দেখি?
কোন্‌ হৃদে ফুটে এত ভাবের কুসুমভার।

তা হলে এ হৃদিধামে তোমারি তোমারি নামে,
বাজিবে মধুর স্বরে মরমবীণার তার।

যা-কিছু গাহিব গান ধ্বনিবে তোমারি নাম,
কী আছে কবির বলো, কী তোমারে দিব আর।।

বড়ো আশা ক'রে এসেছি

বড়ো আশা ক'রে এসেছি গো, কাছে ডেকে লও,
ফিরায়ো না জননী।।

দীনহীনে কেহ চাহে না, তুমি তারে রাখিবে জানি গো।
আর আমি-যে কিছু চাহি নে, চরণতলে বসে থাকিব।
আর আমি-যে কিছু চাহি নে, জননী ব’লে শুধু ডাকিব।

তুমি না রাখিলে, গৃহ আর পাইব কোথা, কেঁদে কেঁদে কোথা বেড়াব–
ওই-যে হেরি তমসঘনঘোরা গহন রজনী।।

বঁধু, মিছে রাগ কোরো না

বঁধু, মিছে রাগ কোরো না, কোরো না।
মম মন বুঝে দেখো মনে মনে--মনে রেখো, কোরো করুণা॥

পাছে আপনারে রাখিতে না পারি
তাই কাছে কাছে থাকি আপনারি--
মুখে হেসে যাই, মনে কেঁদে চাই--সে আমার নহে ছলনা॥

দিনেকের দেখা, তিলেকের সুখ,
ক্ষণেকের তরে শুধু হাসিমুখ--
পলকের পরে থাকে বুক ভ'রে চিরজনমের বেদনা।

তারি মাঝে কেন এত সাধাসাধি,
অবুধ আঁধারে কেন মরি কাঁদি--
দূর হতে এসে ফিরে যাই শেষে বহিয়া বিফল বাসনা॥

আমি চিনি গো চিনি

আমি চিনি গো চিনি তোমারে ওগো বিদেশিনী।
তুমি থাক সিন্ধুপারে ওগো বিদেশিনী॥

তোমায় দেখেছি শারদপ্রাতে, তোমায় দেখেছি মাধবী রাতে,
তোমায় দেখেছি হৃদি-মাঝারে ওগো বিদেশিনী।

আমি আকাশে পাতিয়া কান শুনেছি শুনেছি তোমারি গান,
আমি তোমারে সঁপেছি প্রাণ ওগো বিদেশিনী।

ভুবন ভ্রমিয়া শেষে আমি এসেছি নূতন দেশে,
আমি অতিথি তোমারি দ্বারে ওগো বিদেশিনী॥

প্রতিদান

আমার এ ঘর ভাঙ্গিয়াছে যেবা, আমি বাধি তার ঘর,
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।
যে মোরে করিল পথের বিবাগী;
পথে পথে আমি ফিরি তার লাগি;
দীঘল রজনী তার তরে জাগি ঘুম যে হয়েছে মোর;
আমার এ ঘর ভাঙ্গিয়াছে যেবা, আমি বাধি তার ঘর ।
আমার একুল ভাঙ্গিয়াছে যেবা আমি তার কুল বাধি,
যে গেছে বুকেতে আঘাত হানিয়া তার লাগি আমি কাঁদি;
যে মোরে দিয়েছে বিষ ভরা বান,
আমি দেই তারে বুক ভরা গান;
কাটা পেয়ে তারে ফুল করি দান সারাটি জনম ভর,
আপন করিতে কাদিঁয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর ।
মোর বুকে যেবা কবর বেধেছে আমি তার বুক ভরি,
রঙ্গীন ফুলের সোহাগ জড়ান ফুল মালঞ্চ ধরি।
যে মুখে সে নিঠুরিয়া বাণী,
আমি লয়ে সখী, তারি মুখ খানি,
কত ঠাই হতে কত কি যে আনি, সাজাই নিরন্তর,
আপন করিতে কাদিয়া বেড়াই যে মোরে করিয়াছে পর ।

Wednesday, October 17, 2012

বঁধু কোন্‌ আলো

বঁধু, কোন্‌ আলো লাগল চোখে!
বুঝি দীপ্তিরূপে ছিলে সূর্যলোকে!

ছিল মন তোমারি প্রতীক্ষা করি
যুগে যুগে দিন রাত্রি ধরি,
ছিল মর্মবেদনাঘন অন্ধকারে,
জন্ম-জনম গেল বিরহশোকে।

অস্ফুটমঞ্জরী কুঞ্জবনে,
সংগীতশূন্য বিষণ্ন মনে
সঙ্গীরিক্ত চিরদুঃখরাতি
পোহাব কি নির্জনে শয়ন পাতি!

সুন্দর হে, সুন্দর হে,
বরমাল্যখানি তব আনো বহে,
অবগুণ্ঠনছায়া ঘুচায়ে দিয়ে
হেরো লজ্জিত স্মিতমুখ শুভ আলোকে॥

আমি তোমার প্রেমে

আমি তোমার প্রেমে হব সবার কলঙ্কভাগী।
আমি সকল দাগে হব দাগি॥

তোমার পথের কাঁটা করব চয়ন, যেথা তোমার ধুলার শয়ন
সেথা আঁচল পাতব আমার-- তোমার রাগে অনুরাগী॥

আমি শুচি-আসন টেনে টেনে বেড়াব না বিধান মেনে,
যে পঙ্কে ওই চরণ পড়ে তাহারি ছাপ বক্ষে মাগি॥

আমি জেনে শুনে

আমি, জেনে শুনে বিষ করেছি পান।
প্রাণের আশা ছেড়ে সঁপেছি প্রাণ।

যতই দেখি তারে ততই দহি,
আপন মনোজ্বালা নীরবে সহি,
তবু পারি নে দূরে যেতে, মরিতে আসি,
লই গো বুক পেতে অনল-বাণ।

যতই হাসি দিয়ে দহন করে,
ততই বাড়ে তৃষা প্রেমের তরে,
প্রেম-অমৃত-ধারা ততই যাচি,
যতই করে প্রাণে অশনি দান।

আমারে তুমি অশেষ করেছ

আমারে তুমি অশেষ করেছ, এমনি লীলা তব–
ফুরায়ে ফেলে আবার ভরেছ জীবন নব নব।।

কত-যে গিরি কত-যে নদী -তীরে
বেড়ালে বহি ছোটো এ বাঁশিটিরে,
কত-যে তান বাজালে ফিরে ফিরে
কাহারে তাহা কব।।

তোমারি ওই অমৃতপরশে আমার হিয়াখানি
হারালো সীমা বিপুল হরষে, উথলি উঠে বাণী।
আমার শুধু একটি মুঠি ভরি
দিতেছ দান দিবস-বিভাবরী–
হল না সারা, কত-না যুগ ধরি
কেবলই আমি লব।।

Monday, October 15, 2012

আমার সোনার হরিণ চাই

তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই।
মনোহরণ চপলচরণ সোনার হরিণ চাই॥

সে-যে চমকে বেড়ায় দৃষ্টি এড়ায়, যায় না তারে বাঁধা।
সে-যে নাগাল পেলে পালায় ঠেলে, লাগায় চোখে ধাঁদা।
আমি ছুটব পিছে মিছে মিছে পাই বা নাহি পাই--
আামি আপন-মনে মাঠে বনে উধাও হয়ে ধাই॥

তোরা পাবার জিনিস হাতে কিনিস, রাখিস ঘরে ভরে--
যারে যায় না পাওয়া তারি হাওয়া লাগল কেন মোরে।
আমার যা ছিল তা গেল ঘুচে যা নেই তার ঝোঁকে--
আমার ফুরোয় পুঁজি, ভাবিস, বুঝি মরি তারি শোকে?
আমি আছি সুখে হাস্যমুখে, দুঃখ আমার নাই।
আমি আপন-মনে মাঠে বনে উধাও হয়ে ধাই॥

আমার প্রাণের মানুষ

আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে
তাই হেরি তায় সকল খানে॥

আছে সে নয়নতারায় আলোকধারায়, তাই না হারায়--
ওগো তাই দেখি তায় যেথায় সেথায়
তাকাই আমি যে দিক-পানে॥

আমি তার মুখের কথা শুনব ব'লে গেলাম কোথা,
শোনা হল না, হল না--
আজ ফিরে এসে নিজের দেশে এই-যে শুনি
শুনি তাহার বাণী আপন গানে॥

কে তোরা খুঁজিস তারে কাঙাল-বেশে দ্বারে দ্বারে,
দেখা মেলে না মেলে না,--
ও তোরা আয় রে ধেয়ে দেখ্‌ রে চেয়ে আমার বুকে --
ওরে দেখ্‌ রে আমার দুই নয়ানে॥

আমার মল্লিকাবনে

আমার মল্লিকাবনে যখন প্রথম ধরেছে কলি
তোমার লাগিয়া তখনি, বন্ধু, বেঁধেছিনু অঞ্জলি॥

তখনো কুহেলীজালে,
সখা, তরুণী উষার ভালে
শিশিরে শিশিরে অরুণমালিকা উঠিতেছে ছলোছলি॥

এখনো বনের গান, বন্ধু হয় নি তো অবসান--
তবু এখনি যাবে কি চলি।
ও মোর করুণ বল্লিকা,
ও তোর শ্রান্ত মল্লিকা
ঝরো-ঝরো হল, এই বেলা তোর শেষ কথা দিস বলি॥

আমার হিয়ার মাঝে

আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে দেখতে আমি পাই নি।
তোমায় দেখতে আমি পাই নি।
বাহির-পানে চোখ মেলেছি, আমার হৃদয়-পানে চাই নি ॥

আমার সকল ভালোবাসায় সকল আঘাত সকল আশায়
তুমি ছিলে আমার কাছে, তোমার কাছে যাই নি ॥

তুমি মোর আনন্দ হয়ে ছিলে আমার খেলায়--
আনন্দে তাই ভুলেছিলেম, কেটেছে দিন হেলায়।
গোপন রহি গভীর প্রাণে আমার দুঃখসুখের গানে
সুর দিয়েছ তুমি, আমি তোমার গান তো গাই নি ॥

আমার বেলা যে যায়

আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে ॥

একতারাটির একটি তারে গানের বেদন বইতে নারে,
তোমার সাথে বারে বারে হার মেনেছি এই খেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে ॥

আমার এ তার বাঁধা কাছের সুরে,
ওই বাঁশি যে বাজে দূরে।
গানের লীলার সেই কিনারে যোগ দিতে কি সবাই পারে
বিশ্বহৃদয়পারাবারে রাগরাগিণীর জাল ফেলাতে--
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে?।

আজি বিজন ঘরে


আজি বিজন ঘরে নিশীথরাতে আসবে যদি শূন্য হাতে--
আমি তাইতে কি ভয় মানি!
জানি জানি, বন্ধু, জানি--
তোমার আছে তো হাতখানি ॥

চাওয়া-পাওয়ার পথে পথে দিন কেটেছে কোনোমতে,
এখন সময় হল তোমার কাছে আপনাকে দিই আনি ॥

আঁধার থাকুক দিকে দিকে আকাশ-অন্ধ-করা,
তোমার পরশ থাকুক আমার-হৃদয়-ভরা।
জীবনদোলায় দুলে দুলে আপনারে ছিলেম ভুলে,
এখন জীবন মরণ দু দিক দিয়ে নেবে আমায় টানি ॥

Tuesday, September 25, 2012

এক গাঁয়ে

আমরা দুজন একটি গাঁয়ে থাকি
সেই আমাদের একটিমাত্র সুখ,
তাদের গাছে গায় যে দোয়েল পাখি
তাহার গানে আমার নাচে বুক।

তাহার দুটি পালন-করা ভেড়া
চরে বেড়ায় মোদের বটমূলে,
যদি ভাঙে আমার খেতের বেড়া
কোলের 'পরে নিই তাহারে তুলে।

আমাদের এই গ্রামের নামটি খঞ্জনা,
আমাদের এই নদীর নাম অঞ্জনা,
আমার নাম তো জানে গাঁয়ের পাঁচ জনে--
আমাদের সেই তাহার নামটি রঞ্জনা।

দুইটি পাড়ায় বড়োই কাছাকাছি,
মাঝে শুধু একটি মাঠের ফাঁক--
তাদের বনের অনেক মধুমাছি
মোদের বনে বাঁধে মধুর চাক।

তাদের ঘাটে পূজার জবামালা
ভেসে আসে মোদের বাঁধা ঘাটে,
তাদের পাড়ার কুসুম-ফুলের ডালা
বেচতে আসে মোদের পাড়ার হাটে।

আমাদের এই গ্রামের নামটি খঞ্জনা,
আমাদের এই নদীর নাম অঞ্জনা,
আমার নাম তো জানে গাঁয়ের পাঁচ জনে--
আমাদের সেই তাহার নামটি রঞ্জনা।

আমাদের এই গ্রামের গলি-'পরে
আমের বোলে ভরে আমের বন,
তাদের খেতে যখন তিসি ধরে
মোদের খেতে তখন ফোটে শণ।

তাদের ছাদে যখন ওঠে তারা
আমার ছাদে দখিন হাওয়া ছোটে।
তাদের বনে ঝরে শ্রাবণধারা,
আমার বনে কদম ফুটে ওঠে।

আমাদের এই গ্রামের নামটি খঞ্জনা,
আমাদের এই নদীর নামটি অঞ্জনা,
আমার নাম তো জানে গাঁয়ের পাঁচ জনে--
আমাদের সেই তাহার নামটি রঞ্জনা।

Wednesday, July 18, 2012

আমার মন মানে না

আমার মন মানে না-- দিনরজনী।
আমি কী কথা স্মরিয়া এ তনু ভরিয়া পুলক রাখিতে নারি।

ওগো, কী ভাবিয়া মনে এ দুটি নয়নে উথলে নয়নবারি--
ওগো সজনি॥

সে সুধাবচন, সে সুখপরশ, অঙ্গে বাজিছে বাঁশি।
তাই শুনিয়া শুনিয়া আপনার মনে হৃদয় হয় উদাসী--
কেন না জানি॥

ওগো, বাতাসে কী কথা ভেসে চলে আসে, আকাশে কী মুখ জাগে।
ওগো, বনমর্মরে নদীনির্ঝরে কী মধুর সুর লাগে।

ফুলের গন্ধ বন্ধুর মতো জড়ায়ে ধরিছে গলে--
আমি এ কথা, এ ব্যথা, সুখব্যাকুলতা কাহার চরণতলে
দিব নিছনি॥

আহা, আজি এ বসন্তে

আহা, আজি এ বসন্তে এত ফুল ফুটে,
এত বাঁশি বাজে, এত পাখি গায়,
সখীর হৃদয় কুসুম-কোমল--
কার অনাদরে আজি ঝরে যায়।

কেন কাছে আস, কেন মিছে হাস,
কাছে যে আসিত সে তো আসিতে না চায়।

সুখে আছে যারা, সুখে থাক্‌ তারা,
সুখের বসন্ত সুখে হোক সারা,
দুখিনী নারীর নয়নের নীর
সুখী জনে যেন দেখিতে না পায়।

তারা দেখেও দেখে না, তারা বুঝেও বোঝে না,
তারা ফিরেও না চায়।

আমি তোমার সঙ্গে


আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ সুরের বাঁধনে--
তুমি জান না, আমি তোমারে পেয়েছি অজানা সাধনে॥

সে সাধনায় মিশিয়া যায় বকুলগন্ধ,
সে সাধনায় মিলিয়া যায় কবির ছন্দ--
তুমি জান না, ঢেকে রেখেছি তোমার নাম
রঙিন ছায়ার আচ্ছাদনে॥

তোমার অরূপ মূর্তিখানি
ফাল্গুনের আলোতে বসাই আনি।

বাঁশরি বাজাই ললিত-বসন্তে, সুদূর দিগন্তে
সোনার আভায় কাঁপে তব উত্তরী
গানের তানের সে উন্মাদনে॥

Wednesday, July 11, 2012

আলো আমার আলো

আলো আমার, আলো ওগো, আলো ভুবন-ভরা।
আলো নয়ন-ধোওয়া আমার, আলো হৃদয়-হরা॥

নাচে আলো নাচে, ও ভাই, আমার প্রাণের কাছে--
বাজে আলো বাজে, ও ভাই হৃদয়বীণার মাঝে--
জাগে আকাশ, ছোটে বাতাস, হাসে সকল ধরা॥

আলোর স্রোতে পাল তুলেছে হাজার প্রজাপতি।
আলোর ঢেউয়ে উঠল নেচে মল্লিকা মালতী।

মেঘে মেঘে সোনা, ও ভাই, যায় না মানিক গোনা--
পাতায় পাতায় হাসি, ও ভাই, পুলক রাশি রাশি--
সুরনদীর কূল ডুবেছে সুধা-নিঝর-ঝরা॥

আজ খেলা ভাঙার খেলা

আজ খেলা ভাঙার খেলা খেলবি আয়।
সুখের বাসা ভেঙে ফেলবি আয়।

মিলনমালার আজ বাঁধন তো টুটবে,
ফাগুন-দিনের আজ স্বপন তো ছুটবে,
উধাও মনের পাখা মেলবি আয়॥

অস্তগিরির ওই শিখরচূড়ে
ঝড়ের মেঘের আজ ধ্বজা উড়ে।
কালবৈশাখীর হবে যে-নাচন,
সাথে নাচুক তোর মরণবাঁচন,
হাসি কাঁদন পায়ে ঠেলবি আয়॥

আজ ধানের ক্ষেতে

আজ ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায় লুকোচুরি খেলা রে ভাই, লুকোচুরি খেলা।
নীল আকাশে কে ভাসালে সাদা মেঘের ভেলা রে ভাই-- লুকোচুরি খেলা॥
আজ ভ্রমর ভোলে মধু খেতে-- উড়ে বেড়ায় আলোয় মেতে;
আজ কিসের তরে নদীর চরে চখা-চখীর মেলা॥

ওরে যাব না আজ ঘরে রে ভাই, যাব না আজ ঘরে।
ওরে, আকাশ ভেঙে বাহিরকে আজ নেব রে লুট ক'রে॥
যেন জোয়ার-জলে ফেনার রাশি বাতাসে আজ ছুটছে হাসি,
আজ বিনা কাজে বাজিয়ে বাঁশি কাটবে সকল বেলা॥

ও কেন এত সুন্দরী হলো

ও কেন এত সুন্দরী হলো
অমনি করে ফিরে তাকালো
দেখেতো আমি মুগ্ধ হবোই,
আমিতো মানুষ…

সবে যখন আকাশ জুড়ে মেঘ জমেছে
ঝড় ওঠেনি, বাতাসটাতে ঘোর লেগেছে
ও কেন তখন উড়িয়ে আঁচল
খোলা চুলে বাইরে এলো,
দেখেতো আমি মুগ্ধ হবোই,
আমিতো মানুষ…

সবে যখন প্রানে আমার মন জেগেছে
পৃথিবীটা একটুখানি বদলে গেছে
ও কেন তখন হঠাৎ এমন
বিনা কাজে সামনে এলো,
দেখেতো আমি মুগ্ধ হবোই,
আমিতো মানুষ…

Saturday, June 23, 2012

Coat of Many Colors

Back through the years
I go wonderin once again
Back to the seasons of my youth
I recall a box of rags that someone gave us
And how my momma put the rags to use
There were rags of many colors
Every piece was small
And I didn't have a coat
And it was way down in the fall
Momma sewed the rags together
Sewin every piece with love
She made my coat of many colors
That I was so proud of
As she sewed, she told a story
From the bible, she had read
About a coat of many colors
Joseph wore and then she said
Perhaps this coat will bring you
Good luck and happiness
And I just couldnt wait to wear it
And momma blessed it with a kiss
Chorus:

My coat of many colors
That my momma made for me
Made only from rags
But I wore it so proudly
Although we had no money
I was rich as I could be
In my coat of many colors
My momma made for me

So with patches on my britches
Holes in both my shoes
In my coat of many colors
I hurried off to school
Just to find the others laughing
And making fun of me
In my coat of many colors
My momma made for me

And oh I couldnt understand it
For I felt I was rich
And I told them of the love
My momma sewed in every stitch
And I told em all the story
Momma told me while she sewed
And how my coat of many colors
Was worth more than all their clothes

But they didn't understand it
And I tried to make them see
That one is only poor
Only if they choose to be
Now I know we had no money
But I was rich as I could be
In my coat of many colors
My momma made for me
Made just for me

Friday, June 15, 2012

আধেক ঘুমে

আধেক ঘুমে নয়ন চুমে স্বপন দিয়ে যায়।
শ্রান্ত ভালে যূথীর মালে পরশে মৃদু বায়॥

বনের ছায়া মনের সাথি, বাসনা নাহি কিছু-
পথের ধারে আসন পাতি, না চাহি ফিরে পিছু-
বেণুর পাতা মিশায় গাথা নীরব ভাবনায়॥

মেঘের খেলা গগনতটে অলস লিপি-লিখা,
সুদূর কোন্‌ স্ময়ণপটে জাগিল মরীচিকা।

চৈত্রদিনে তপ্ত বেলা তৃণ-আঁচল পেতে
শূন্যতলে গন্ধ-ভেলা ভাসায় বাতাসেতে-
কপোত ডাকে মধুকশাখে বিজন বেদনায়॥

Long Nights

Have no fear
For when I'm alone
I'll be better off than I was before

I've got this light
I'll be around to grow
Who I was before
I cannot recall

Long nights allow me to feel...
I'm falling...I am falling
The lights go out
Let me feel
I'm falling
I am falling safely to the ground
Ah...

I'll take this soul that's inside me now
Like a brand new friend
I'll forever know

I've got this light
And the will to show
I will always be better than before

Long nights allow me to feel...
I'm falling...I am falling
The lights go out
Let me feel
I'm falling
I am falling safely to the ground

নবীন

ওরে নবীন, ওরে আমার কাঁচা,
ওরে সবুজ, ওরে অবুঝ,
আধমরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা।

রক্ত আলোর মদে মাতাল ভোরে
আজকে যে যা বলে বলুক তোরে,
সকল তর্ক হেলায় তুচ্ছ ক'রে
পুচ্ছটি তোর উচ্চে তুলে নাচা।
আয় দুরন্ত, আয় রে আমার কাঁচা।

খাঁচাখানা দুলছে মৃদু হাওয়ায়;
আর তো কিছুই নড়ে না রে
ওদের ঘরে, ওদের ঘরের দাওয়ায়।
ওই যে প্রবীণ, ওই যে পরম পাকা,
চক্ষুকর্ণ দুইটি ডানায় ঢাকা,
ঝিমায় যেন চিত্রপটে আঁকা
অন্ধকারে বন্ধ করা খাঁচায়।
আয় জীবন্ত, আয় রে আমার কাঁচা।

বাহিরপানে তাকায় না যে কেউ,
দেখে না যে বাণ ডেকেছে
জোয়ার-জলে উঠছে প্রবল ঢেউ।
চলতে ওরা চায় না মাটির ছেলে
মাটির 'পরে চরণ ফেলে ফেলে,
আছে অচল আসনখানা মেলে
যে যার আপন উচ্চ বাঁশের মাচায়,
আয় অশান্ত, আয় রে আমার কাঁচা।

তোরে হেথায় করবে সবাই মানা।
হঠাৎ আলো দেখবে যখন
ভাববে এ কী বিষম কাণ্ডখানা।
সংঘাতে তোর উঠবে ওরা রেগে,
শয়ন ছেড়ে আসবে ছুটে বেগে,
সেই সুযোগে ঘুমের থেকে জেগে
লাগবে লড়াই মিথ্যা এবং সাঁচায়।
আয় প্রচণ্ড, আয় রে আমার কাঁচা।

শিকল-দেবীর ওই যে পূজাবেদী
চিরকাল কি রইবে খাড়া।
পাগলামি তুই আয় রে দুয়ার ভেদি।
ঝড়ের মাতন, বিজয়-কেতন নেড়ে
অট্টহাস্যে আকাশখানা ফেড়ে,
ভোলানাথের ঝোলাঝুলি ঝেড়ে
ভুলগুলো সব আন্‌ রে বাছা-বাছা।
আয় প্রমত্ত, আয় রে আমার কাঁচা।

আন্‌ রে টেনে বাঁধা-পথের শেষে।
বিবাগী কর্‌ অবাধপানে,
পথ কেটে যাই অজানাদের দেশে।
আপদ আছে, জানি অঘাত আছে,
তাই জেনে তো বক্ষে পরান নাচে,
ঘুচিয়ে দে ভাই পুঁথি-পোড়োর কাছে
পথে চলার বিধিবিধান যাচা।
আয় প্রমুক্ত, আয় রে আমার কাঁচা।

চিরযুবা তুই যে চিরজীবী,
জীর্ণ জরা ঝরিয়ে দিয়ে
প্রাণ অফুরান ছড়িয়ে দেদার দিবি।
সবুজ নেশায় ভোর করেছি ধরা,
ঝড়ের মেঘে তোরি তড়িৎ ভরা,
বসন্তেরে পরাস আকুল-করা
আপন গলার বকুল-মাল্যগাছা,
আয় রে অমর, আয় রে আমার কাঁচা।

তুমি কি কেবল ছবি

তুমি কি কেবল ছবি শুধু পটে লিখা।
ওই যে সুদূর নীহারিকা
যারা করে আছে ভিড়
আকাশের নীড়;
ওই যে যারা দিনরাত্রি
আলো-হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী
গ্রহ তারা রবি
তুমি কি তাদেরি মতো সত্য নও।
হায় ছবি, তুমি শুধু ছবি।

চিরচঞ্চলের মাঝে তুমি কেন শান্ত হয়ে রও।
পথিকের সঙ্গ লও
ওগো পথহীন।
কেন রাত্রিদিন
সকলের মাঝে থেকে সবা হতে আছ এত দূরে
স্থিরতার চির অন্তঃপুরে।
এই ধূলি
ধূসর অঞ্চল তুলি
বায়ুভরে ধায় দিকে দিকে;
বৈশাখে সে বিধবার আভরণ খুলি
তপস্বিনী ধরণীরে সাজায় গৈরিকে;
অঙ্গে তার পত্রলিখা দেয় লিখে
বসন্তের মিলন-উষায়,
এই ধূলি এও সত্য হায়;
এই তৃণ
বিশ্বের চরণতলে লীন
এরা যে অস্থির, তাই এরা সত্য সবি--
তুমি স্থির, তুমি ছবি,
তুমি শুধু ছবি।

একদিন এই পথে চলেছিলে আমাদের পাশে।
বক্ষ তব দুলিত নিশ্বাসে;
অঙ্গে অঙ্গে প্রাণ তব
কত গানে কত নাচে
রচিয়াছে
আপনার ছন্দ নব নব
বিশ্বতালে রেখে তাল;
সে যে আজ হল কত কাল।
এ জীবনে
আমার ভুবনে
কত সত্য ছিলে।
মোর চক্ষে এ নিখিলে
দিকে দিকে তুমিই লিখিলে
রূপের তুলিকা ধরি রসের মুরতি।
সে-প্রভাতে তুমিই তো ছিলে
এ-বিশ্বের বাণী মূর্তিমতী।
একসাথে পথে যেতে যেতে
রজনীর আড়ালেতে
তুমি গেলে থামি।
তার পরে আমি
কত দুঃখে সুখে
রাত্রিদিন চলেছি সম্মুখে।
চলেছে জোয়ার-ভাঁটা আলোকে আঁধারে
আকাশ-পাথারে;
পথের দুধারে
চলেছে ফুলের দল নীরব চরণে
বরনে বরনে;
সহস্রধারায় ছোটে দুরন্ত জীবন-নির্ঝরিণী
মরণের বাজায়ে কিঙ্কিণী।
অজানার সুরে
চলিয়াছি দূর হতে দূরে--
মেতেছি পথের প্রেমে।
তুমি পথ হতে নেমে
যেখানে দাঁড়ালে
সেখানেই আছ থেমে।
এই তৃণ, এই ধূলি-- ওই তারা, ওই শশী-রবি
সবার আড়ালে
তুমি ছবি, তুমি শুধু ছবি।
কী প্রলাপ কহে কবি।
তুমি ছবি?
নহে নহে, নও শুধু ছবি।

কে বলে রয়েছ স্থির রেখার বন্ধনে
নিস্তব্ধ ক্রন্দনে।
মরি মরি, সে আনন্দ থেমে যেত যদি
এই নদী
হারাত তরঙ্গবেগ,
এই মেঘ
মুছিয়া ফেলিত তার সোনার লিখন।
তোমার চিকন
চিকুরের ছায়াখানি বিশ্ব হতে যদি মিলাইত
তবে
একদিন কবে
চঞ্চল পবনে লীলায়িত
মর্মর-মুখর ছায়া মাধবী-বনের
হত স্বপনের।
তোমায় কি গিয়েছিনু ভুলে।
তুমি যে নিয়েছ বাসা জীবনের মূলে
তাই ভুল।
অন্যমনে চলি পথে, ভুলি নে কি ফুল।
ভুলি নে কি তারা।
তবুও তাহারা
প্রাণের নিশ্বাসবায়ু করে সুমধুর,
ভুলের শূন্যতা-মাঝে ভরি দেয় সুর।
ভুলে থাকা নয় সে তো ভোলা;
বিস্মৃতির মর্মে বসি রক্তে মোর দিয়েছ যে দোলা।
নয়নসম্মুখে তুমি নাই,
নয়নের মাঝখানে নিয়েছ যে ঠাঁই;
আজি তাই
শ্যামলে শ্যামল তুমি, নীলিমায় নীল।
আমার নিখিল
তোমাতে পেয়েছে তার অন্তরের মিল।
নাহি জানি, কেহ নাহি জানে
তব সুর বাজে মোর গানে;
কবির অন্তরে তুমি কবি,
নও ছবি, নও ছবি, নও শুধু ছবি।
তোমারে পেয়েছি কোন্‌ প্রাতে,
তার পরে হারায়েছি রাতে।
তার পরে অন্ধকারে অগোচরে তোমারেই লভি।
নও ছবি, নও তুমি ছবি।

তোমরা ও আমরা

তোমরা হাসিয়া বহিয়া চলিয়া যাও
কুলুকুলুকল নদীর স্রোতের মতো।
আমরা তীরেতে দাঁড়ায়ে চাহিয়া থাকি,
মরমে গুমরি মরিছে কামনা কত।

আপনা-আপনি কানাকানি কর সুখে,
কৌতুকছটা উছসিছে চোখে মুখে,
কমলচরণ পড়িছে ধরণী-মাঝে,
কনকনূপুর রিনিকি ঝিনিকি বাঝে।

অঙ্গে অঙ্গ বাঁধিছে রঙ্গপাশে,
বাহুতে বাহুতে জড়িত ললিত লতা।
ইঙ্গিতরসে ধ্বনিয়া উঠিছে হাসি,
নয়নে নয়নে বহিছে গোপন কথা।

আঁখি নত করি একেলা গাঁথিছ ফুল,
মুকুর লইয়া যতনে বাঁধিছ চুল।
গোপন হৃদয়ে আপনি করিছ খেলা,
কী কথা ভাবিছ, কেমন কাটিছে বেলা।

চকিতে পলকে অলক উড়িয়া পড়ে,
ঈষৎ হেলিয়া আঁচল মেলিয়া যাও--
নিমেষ ফেলিতে আঁখি না মেলিতে,ত্বরা
নয়নের আড়ে না জানি কাহারে চাও।

যৌবনরাশি টুটিতে লুটিতে চায়,
বসনে শাসনে বাঁধিয়া রেখেছ তায়।
তবু শতবার শতধা হইয়া ফুটে,
চলিতে ফিরিতে ঝলকি চলকি উঠে।

আমরা মূর্খ কহিতে জানি নে কথা,
কী কথা বলিতে কী কথা বলিয়া ফেলি।
অসময়ে গিয়ে লয়ে আপনার মন,
পদতলে দিয়ে চেয়ে থাকি আঁখি মেলি।

তোমরা দেখিয়া চুপি চুপি কথা কও,
সখীতে সখীতে হাসিয়া অধীর হও,
বসন-আঁচল বুকেতে টানিয়া লয়ে
হেসে চলে যাও আশার অতীত হয়ে।

আমরা বৃহৎ অবোধ ঝড়ের মতো
আপন আবেগে ছুটিয়া চলিয়া আসি।
বিপুল আঁধারে অসীম আকাশ ছেয়ে
টুটিবারে চাহি আপন হৃদয়রাশি।

তোমরা বিজুলি হাসিতে হাসিতে চাও,
আঁধার ছেদিয়া মরম বিঁধিয়া দাও,
গগনের গায়ে আগুনের রেখা আঁকি
চকিতে চরণে চলে যাও দিয়ে ফাঁকি।

অযতনে বিধি গড়েছে মোদের দেহ,
নয়ন অধর দেয় নি ভাষায় ভরে।
মোহন মধুর মন্ত্র জানি নে মোরা,
আপনা প্রকাশ করিব কেমন করে?

তোমরা কোথায় আমরা কোথায় আছি,
কোনো সুলগনে হব না কি কাছাকাছি।
তোমরা হাসিয়া বহিয়া চলিয়া যাবে,
আমরা দাঁড়ায়ে রহিব এমনি ভাবে!

দুয়োরানী

ইচ্ছে করে মা, যদি তুই
হতিস দুয়োরানী!
ছেড়ে দিতে এমনি কি ভয়
তোমার এ ঘরখানি।

ঐখানে ঐ পুকুরপারে
জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে
ও যেন ঘোর বনের মধ্যে
কেউ কোত্থাও নেই।

ঐখানে ঝাউতলা জুড়ে
বাঁধব মোরা ছোট্ট কুঁড়ে,
শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে
থাকব দুজনেই।

বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে
আসবে না কেউ তোমার কাছে,
দিনরাত্তির কোমর বেঁধে
থাকব পাহারাতে।

রাক্ষসেরা ঝোপে ঝাড়ে
মারবে উঁকি আড়ে আড়ে
দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি
ধনুক নিয়ে হাতে।

আঁচলেতে খই নিয়ে তুই
যেই দাঁড়াবি দ্বারে
অমনি যত বনের হরিণ
আসবে সারে সারে।

শিংগুলি সব আঁকাবাঁকা,
গায়েতে দাগ চাকা চাকা,
লুটিয়ে তারা পড়বে ভুঁয়ে
পায়ের কাছে এসে।

ওরা সবাই আমায় বোঝে,
করবে না ভয় একটুও যে,
হাত বুলিয়ে দেব গায়ে,
বসবে কাছে ঘেঁষে।

ফলসা-বনে গাছে গাছে
ফল ধরে মেঘ করে আছে,
ঐখানেতে ময়ূর এসে
নাচ দেখিয়ে যাবে।

শালিখরা সব মিছিমিছি
লাগিয়ে দেবে কিচিমিচি,
কাঠবেড়ালি লেজটি তুলে
হাত থেকে ধান খাবে।

দিন ফুরোবে, সাঁজের আঁধার
নামবে তালের গাছে।
তখন এসে ঘরের কোণে
বসব কোলের কাছে।

থাকবে না তোর কাজ কিছু তো,
রইবে না তোর কোনো ছুতো,
রূপ-কথা তোর বলতে হবে
রোজই নতুন করে।

সীতার বনবাসের ছড়া
সবগুলি তোর আছে পড়া;
সুর করে তাই আগাগোড়া
গাইতে হবে তোরে।

তার পরে যেই অশথবনে
ডাকবে পেঁচা, আমার মনে
একটুখানি ভয় করবে
রাত্রি নিষুত হলে।

তোমার বুকে মুখটি গুঁজে
ঘুমেতে চোখ আসবে বুজে
তখন আবার বাবার কাছে
যাস নে যেন চলে!

রবিবার

সোম মঙ্গল বুধ এরা সব
আসে তাড়াতাড়ি,
এদের ঘরে আছে বুঝি
মস্ত হাওয়াগাড়ি?

রবিবার সে কেন, মা গো,
এমন দেরি করে?
ধীরে ধীরে পৌঁছয় সে
সকল বারের পরে।

আকাশপারে তার বাড়িটি
দূর কি সবার চেয়ে?
সে বুঝি, মা, তোমার মতো
গরিব-ঘরের মেয়ে?

সোম মঙ্গল বুধের খেয়াল
থাকবারই জন্যেই,
বাড়ি-ফেরার দিকে ওদের
একটুও মন নেই।

রবিবারকে কে যে এমন
বিষম তাড়া করে,
ঘণ্টাগুলো বাজায় যেন
আধ ঘণ্টার পরে।

আকাশ-পারে বাড়িতে তার
কাজ আছে সব-চেয়ে
সে বুঝি, মা, তোমার মতো
গরিব-ঘরের মেয়ে।

সোম মঙ্গল বুধের যেন
মুখগুলো সব হাঁড়ি,
ছোটো ছেলের সঙ্গে তাদের
বিষম আড়াআড়ি।

কিন্তু শনির রাতের শেষে
যেমনি উঠি জেগে,
রবিবারের মুখে দেখি
হাসিই আছে লেগে।

যাবার বেলায় যায় সে কেঁদে
মোদের মুখে চেয়ে।
সে বুঝি, মা, তোমার মতো
গরিব ঘরের মেয়ে?

দুষ্টু

তোমার কাছে আমিই দুষ্টু
ভালো যে আর সবাই।
মিত্তিরদের কালু নিলু
ভারি ঠাণ্ডা ক-ভাই!

যতীশ ভালো, সতীশ ভালো,
ন্যাড়া নবীন ভালো,
তুমি বল ওরাই কেমন
ঘর করে রয় আলো।

মাখন বাবুর দুটি ছেলে
দুষ্টু তো নয় কেউ--
গেটে তাদের কুকুর বাঁধা
কর্তেছে ঘেউ ঘেউ।

পাঁচকড়ি ঘোষ লক্ষ্মী ছেলে,
দত্তপাড়ার গবাই,
তোমার কাছে আমিই দুষ্টু
ভালো যে আর সবাই।

তোমার কথা আমি যেন
শুনি নে কক্‌খনোই,
জামাকাপড় যেন আমার
সাফ থাকে না কোনোই!

খেলা করতে বেলা করি,
বৃষ্টিতে যাই ভিজে,
দুষ্টুপনা আরো আছে
অমনি কত কী যে!

বাবা আমার চেয়ে ভালো?
সত্যি বলো তুমি,
তোমার কাছে করেন নি কি
একটুও দুষ্টুমি?

যা বল সব শোনেন তিনি,
কিচ্ছু ভোলেন নাকো?
খেলা ছেড়ে আসেন চলে
যেমনি তুমি ডাক?

মনে পড়া

মাকে আমার পড়ে না মনে।
শুধু কখন খেলতে গিয়ে
হঠাৎ অকারণে
একটা কী সুর গুনগুনিয়ে
কানে আমার বাজে,
মায়ের কথা মিলায় যেন
আমার খেলার মাঝে।

মা বুঝি গান গাইত, আমার
দোলনা ঠেলে ঠেলে;
মা গিয়েছে, যেতে যেতে
গানটি গেছে ফেলে।

মাকে আমার পড়ে না মনে।
শুধু যখন আশ্বিনেতে
ভোরে শিউলিবনে
শিশির-ভেজা হাওয়া বেয়ে
ফুলের গন্ধ আসে,
তখন কেন মায়ের কথা
আমার মনে ভাসে?

কবে বুঝি আনত মা সেই
ফুলের সাজি বয়ে,
পুজোর গন্ধ আসে যে তাই
মায়ের গন্ধ হয়ে।

মাকে আমার পড়ে না মনে।
শুধু যখন বসি গিয়ে
শোবার ঘরের কোণে;
জানলা থেকে তাকাই দূরে
নীল আকাশের দিকে
মনে হয়, মা আমার পানে
চাইছে অনিমিখে।

কোলের 'পরে ধরে কবে
দেখত আমায় চেয়ে,
সেই চাউনি রেখে গেছে
সারা আকাশ ছেয়ে।

অন্য মা

আমার মা না হয়ে তুমি
আর কারো মা হলে
ভাবছ তোমায় চিনতেম না,
যেতেম না ঐ কোলে?

মজা আরো হত ভারি,
দুই জায়গায় থাকত বাড়ি,
আমি থাকতেম এই গাঁয়েতে,
তুমি পারের গাঁয়ে।

এইখানেতে দিনের বেলা
যা-কিছু সব হত খেলা
দিন ফুরোলেই তোমার কাছে
পেরিয়ে যেতেম নায়ে।

হঠাৎ এসে পিছন দিকে
আমি বলতেম, "বল্‌ দেখি কে?"
তুমি ভাবতে, চেনার মতো
চিনি নে তো তবু।

তখন কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ে
আমি বলতেম গলা ধরে--
"আমায় তোমার চিনতে হবেই,
আমি তোমার অবু!"

ঐ পারেতে যখন তুমি
আনতে যেতে জল,--
এই পারেতে তখন ঘাটে
বল্‌ দেখি কে বল্‌?

কাগজ-গড়া নৌকোটিকে
ভাসিয়ে দিতেম তোমার দিকে,
যদি গিয়ে পৌঁছত সে
বুঝতে কি, সে কার?

সাঁতার আমি শিখিনি যে
নইলে আমি যেতেম নিজে,
আমার পারের থেকে আমি
যেতেম তোমার পার।

মায়ের পারে অবুর পারে
থাকত তফাত, কেউ তো কারে
ধরতে গিয়ে পেত নাকো,
রইত না একসাথে।

দিনের বেলায় ঘুরে ঘুরে
দেখা-দেখি দূরে দূরে,--
সন্ধ্যেবেলায় মিলে যেত
অবুতে আর মা-তে।

কিন্তু হঠাৎ কোনোদিনে
যদি বিপিন মাঝি
পার করতে তোমার পারে
নাই হত মা রাজি।

ঘরে তোমার প্রদীপ জ্বেলে
ছাতের 'পরে মাদুর মেলে
বসতে তুমি, পায়ের কাছে
বসত ক্ষান্ত বুড়ী,

উঠত তারা সাত ভায়েতে,
ডাকত শেয়াল ধানের খেতে,
উড়ো ছায়ার মতো বাদুড়
কোথায় যেত উড়ি।

তখন কি মা, দেরি দেখে
ভয় হত না থেকে থেকে,
পার হয়ে, মা, আসতে হতই
অবু যেথায় আছে।

তখন কি আর ছাড়া পেতে?
দিতেম কি আর ফিরে যেতে?
ধরা পড়ত মায়ের ওপার
অবুর পায়ের কাছে।


বাণী-বিনিময়

মা, যদি তুই আকাশ হতিস,
 আমি চাঁপার গাছ,
তোর সাথে মোর বিনি-কথায়
হত কথার নাচ।

তোর হাওয়া মোর ডালে ডালে
কেবল থেকে থেকে
কত রকম নাচন দিয়ে
আমায় যেত ডেকে।

মা ব'লে তার সাড়া দেব
কথা কোথায় পাই,
পাতায় পাতায় সাড়া আমার
নেচে উঠত তাই।

তোর আলো মোর শিশির-ফোঁটায়
আমার কানে কানে
টলমলিয়ে কী বলত যে
ঝলমলানির গানে।

আমি তখন ফুটিয়ে দিতেম
আমার যত কুঁড়ি,
কথা কইতে গিয়ে তারা
নাচন দিত জুড়ি।

উড়ো মেঘের ছায়াটি তোর
কোথায় থেকে এসে
আমার ছায়ায় ঘনিয়ে উঠে'
কোথায় যেত ভেসে।

সেই হত তোর বাদল-বেলার
রূপকথাটির মতো;
রাজপুত্তুর ঘর ছেড়ে যায়
পেরিয়ে রাজ্য কত;

সেই আমারে বলে যেত
কোথায় আলেখ-লতা,
সাগরপারের দৈত্যপুরের
রাজকন্যার কথা;

দেখতে পেতেম দুয়োরানীর
চক্ষু ভর-ভর,
শিউরে উঠে পাতা আমার
কাঁপত থরথর।

হঠাৎ কখন বৃষ্টি তোমার
হাওয়ার পাছে পাছে
নামত আমার পাতায় পাতায়
টাপুর-টুপুর নাচে;

সেই হত তোর কাঁদন-সুরে
রামায়ণের পড়া,
সেই হত তোর গুনগুনিয়ে
শ্রাবণ-দিনের ছড়া।

মা, তুই হতিস নীলবরনী,
আমি সবুজ কাঁচা;
তোর হত, মা, আলোর হাসি,
আমার পাতার নাচা।

তোর হত, মা, উপর থেকে
নয়ন মেলে চাওয়া,
আমার হত আঁকুবাঁকু
হাত তুলে গান গাওয়া।

তোর হত, মা চিরকালের
তারার মণিমালা,
আমার হত দিনে দিনে
ফুল-ফোটাবার পালা।

Thursday, June 14, 2012

Hallelujah

I've heard there was a secret chord
That David played, and it pleased the Lord
But you don't really care for music, do you?
It goes like this
The fourth, the fifth
The minor fall, the major lift
The baffled king composing Hallelujah

Hallelujah, Hallelujah
Hallelujah, Hallelujah

Your faith was strong but you needed proof
You saw her bathing on the roof
Her beauty in the moonlight overthrew you
She tied you to a kitchen chair
She broke your throne, and she cut your hair
And from your lips she drew the Hallelujah

Hallelujah, Hallelujah
Hallelujah, Hallelujah

Baby I have been here before
I know this room, I've walked this floor
I used to live alone before I knew you.
I've seen your flag on the marble arch
Love is not a victory march
It's a cold and it's a broken Hallelujah

Hallelujah, Hallelujah
Hallelujah, Hallelujah

There was a time when you let me know
What's really going on below
But now you never show it to me, do you?
And remember when I moved in you
The holy dove was moving too
And every breath we drew was Hallelujah

Hallelujah, Hallelujah
Hallelujah, Hallelujah

Maybe there’s a God above
But all I’ve ever learned from love
Was how to shoot at someone who outdrew you
It’s not a cry you can hear at night
It’s not somebody who has seen the light
It’s a cold and it’s a broken Hallelujah

Hallelujah, Hallelujah
Hallelujah, Hallelujah

You say I took the name in vain
I don't even know the name
But if I did, well, really, what's it to you?
There's a blaze of light in every word
It doesn't matter which you heard
The holy or the broken Hallelujah

Hallelujah, Hallelujah
Hallelujah, Hallelujah

I did my best, it wasn't much
I couldn't feel, so I tried to touch
I've told the truth, I didn't come to fool you
And even though it all went wrong
I'll stand before the Lord of Song
With nothing on my tongue but Hallelujah

Hallelujah, Hallelujah
Hallelujah, Hallelujah
Hallelujah, Hallelujah
Hallelujah, Hallelujah
Hallelujah, Hallelujah
Hallelujah, Hallelujah
Hallelujah, Hallelujah
Hallelujah, Hallelujah
Hallelujah

সোনার তরী

গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা।
কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা।
 রাশি রাশি ভারা ভারা
ধান কাটা হল সারা,
ভরা নদী ক্ষুরধারা
খরপরশা।
কাটিতে কাটিতে ধান এল বরষা।

একখানি ছোটো খেত, আমি একেলা,
চারি দিকে বাঁকা জল করিছে খেলা।
পরপারে দেখি আঁকা
তরুছায়ামসীমাখা
গ্রামখানি মেঘে ঢাকা
প্রভাতবেলা--
এ পারেতে ছোটো খেত, আমি একেলা।

গান গেয়ে তরী বেয়ে কে আসে পারে,
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।
ভরা-পালে চলে যায়,
কোনো দিকে নাহি চায়,
ঢেউগুলি নিরুপায়
ভাঙে দু-ধারে--
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।

ওগো, তুমি কোথা যাও কোন্‌ বিদেশে,
বারেক ভিড়াও তরী কূলেতে এসে।
যেয়ো যেথা যেতে চাও,
যারে খুশি তারে দাও,
শুধু তুমি নিয়ে যাও
ক্ষণিক হেসে
আমার সোনার ধান কূলেতে এসে।

যত চাও তত লও তরণী-'পরে।
আর আছে?-- আর নাই, দিয়েছি ভরে।
এতকাল নদীকূলে
যাহা লয়ে ছিনু ভুলে
সকলি দিলাম তুলে
থরে বিথরে--
এখন আমারে লহ করুণা করে।

ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই-- ছোটো সে তরী
আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি।
শ্রাবণগগন ঘিরে
ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে,
শূন্য নদীর তীরে
রহিনু পড়ি--
যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী।

Wednesday, May 16, 2012

এক হারিয়ে যাওয়া বন্ধুর সাথে

এক হারিয়ে যাওয়া বন্ধুর সাথে
সকাল বিকেল বেলা,
কত পুরোনো নতুন পরিচিত গান
গাইতাম খুলে গলা।
কত এলোমেলো পথ হেঁটেছি দু’জন
হাত ছিল না তো হাতে,
ছিল যে যার জীবনে দু’টো মন ছিল
জড়াজড়ি একসাথে।
কত ঝগড়া-বিবাদ সুখের স্মৃতিতে
ভরে আছে শৈশব,
তোকে স্মৃতিতে স্মৃতিতে এখনো তো
ভালোবাসছি অসম্ভব।
কেন বাড়লে বয়স
ছোট্টবেলার বন্ধু হারিয়ে যায়,
কেন হারাচ্ছে সব বাড়াচ্ছে ভিড়
হারানোর তালিকায়।
আজ কে যে কোথায় আছি
কোন খবর নেই তো কারো,
অথচ তোর ঐ দুঃখগুলোতে
অংশ ছিল আমারও।
এই চলতি জীবন ঘটনাবহুল
দু’ এক ইঞ্চি ফাঁকে,
তুইতো পাবিনা আমায়
আর আমিও খুঁজিনা তোকে।
কত সুখ পাওয়া হয়ে গেল,
তোকে ভুলে গেছি কতবার
তবু শৈশব থেকে তোর গান যেন ভেসে আসে বারবার।
আজ চলতে শিখে গেছি
তোকে নেই কিছু প্রয়োজন,
তবু ভীষন অপ্রয়োজনে তোকেই
খুঁজছে আমার মন।
তুই হয়তো ভালোই আছিস
আর আমিও মন্দ নেই,
তবু অসময়ে এসে স্মৃতিগুলো বুকে
আঁকিবুকি কাটবেই।
তুই কতদুরে চলে গেলি
তোকে হারিয়ে ফেলেছি আমি,
এই দুঃখটা হয়ে থাক
এই দুঃখটা বড় দামী।
সেই কোন কথা নেই মুখে,
শুধু চুপচাপ বসে থাকা,
ছিল যার যার ব্যথা তার তার বুকে
ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা।
আমি ভাবিনি তখন ভুলেও এমন
দু’জন দু’দিকে যাবে,
বুঝিনি আমার হৃদস্পন্দন
আমারই অচেনা হবে।
এই বিভক্ত পৃথিবীতে বড় শক্ত বাঁধন ছিল
হলো অহংকারের জয়, সেই বন্ধন ছিঁড়ে গেলো।
সেই অহংকারের খেলায় দু’জনে
জিতে গেছি একসাথে,
প্রতি ইটের জবাব পাথরে দিয়েছি
বিজয়ের মালা হাতে।
সেই বিজয়োল্লাস প্রতিধ্বনিত
মুর্ত আর্তনাদে,
আজ বুকের ভিতর মিষ্টি একটা
শৈশব শুধু কাঁদে।
আজ অবেলার অবসরে কেন লাগছে ভীষন একা,
কত হাজার বছর তোর হাতটাকে হয়নি তো ছুঁয়ে দেখা।
আমি কত কত বার আঁকি তোর ছবি
ভঙ্গুর কল্পনাতে,
আজও জ্বলে যাই আজও পুড়ে যাই
তোর দু’চোখের অবসাদে।
দ্যাখ্‌ নীল নীল নীল আকাশের মত
অনন্ত হাহাকার,
আজ বুকের ভেতর ভাঙছে ভাঙছে
ভেঙে সব চুরমার।
কোন শত্রুরও যেন প্রাণের বন্ধু
এমন দূরে না যায়,
শোন বন্ধু কখনো কোন বন্ধুকে
বলোনা যেন বিদায়।