Friday, May 30, 2014

একলা হলে

ক্রমশ একলা হলে কমে এলো সব গুঞ্জন
জারুল গাছের ছায়া রোদ্দুরে হেলেছে এখন,
পড়ে এলো বেলা দ্যাখো পায়রা-র ঘুলঘুলি ছুঁয়ে
বিকেল এখন এই শহরের রাস্তায় শুয়ে,
চায়ের দোকানে ধোঁয়া, সসপ্যানে মাদার ডেয়ারী
পুরনো বাড়ির ছাদে এলোচুল পাতার কেয়ারি,
হেলান দিচ্ছে শেষ বেলা, ভাঙা দেয়ালের গায়ে
ফুটন্ত দুধ-জল মিশছে এখন গূঁড়ো চায়ে।

গলি বেয়ে হাওয়া আসে, হাত-রিকশার মত ঢিমে
তোমার সময় মেশে গোধূলির ধূসর অসীমে,
আকাশে ভাসাও চুল হলুদ রোদ্দুরের খোঁজে
পড়ে আসা বেলা ওই নয়নের আকুলতা বোঝে,
স্কুল থেকে ফিরে ছেলে গ্যাছে ফের খেলতে কোথাও
যৌবন-ও চলে গ্যাছে, কেন মিছিমিছি ফিরে চাও?
ফেরে কি কখনো কেউ ফেলে আসা একই জায়গায়
চলে যায় সব কিছু, ওই দ্যাখো বেলা চলে যায়।

কোথায় জলকে চল, রুপকথা ভুলে যাওয়া যুগ
টেলিফোনে ডাকো সই, বকুল-রা বেড়াতে আসুক,
সন্ধের চায়ে হবে মুচমুচে নিমকি চিবোনো
পুরনো দিনের কথা বলবেনা দেখো একজনও,
বড়জোর উত্তমকুমারের প্রসঙ্গ তুলে
পারমিতা দেবে হাত, নিজের লুটিয়ে পড়া চুলে,
তারপরে আলোচনা, কার ছেলে ফিজিক্সে ভালো
তারই ফাঁকে রেকাবীতে টক-ঝাল চানাচুর ঢালো।

পরিকল্পনা হবে, কারা যাবে ছুটিতে কোথায়
ইচ্ছে নৈনিতাল, সাধ যেতে চাইছে গোয়ায়,
স্বামীর সময় কম, ছেলেমেয়ে যে যার শিবিরে
হারানো সময় আর কোনওদিন আসবে না ফিরে,
সময় নিয়েছে ছুটি, ছুটি নিয়ে গ্যাছে যৌবন
জারুল গাছের গায়ে রোদ্দুর হেলেছে এখন,
ঢেলে দ্যায় সূর্যটা শেষ রঙ আকাশের গায়ে
বন্ধুরা আসবেন, মন দাও বিকেলের চায়ে।

নিখোজ ঈশ্বর অথবা এক বন্ধুর খোজে

হয়তো আমি হারিয়েছি পথ হয়তো আমি একা
প্রতিটি মোরে খুজছি তবু হয়তো হবে দেখা।

হয়তো এখন গরম ভীষণ শার্টটা ভেজা ঘামে
তবু হাতে শুকনো আছে স্বপ্নভরা খামে,
হয়তো আজও মেঘ করেছে হবে না বৃষ্টি তবু....

এসো আমার শহর জুড়ে নেমে এসো প্রাণে
এসো আমার রাস্তা জুড়ে অসহ্যকর জ্যামে,
এসো তুমি ঐ ভিখারীর বাড়িয়ে দেওয়া হাতে
ফুঠপাথে ঘুমিয়ে থাকা টোকাই ছেলের রাতে।

হয়তো তুমি রাগ করো না তবুও তুমি একা
ঠিক করেছো এই আমাকে আর দেবে না দেখা,
হয়তো তুমি চাইছো ভীষণ আমায় ফাঁকি দিতে
আমায় ভীষণ একা করে পথে ঠেলে দিতে,
বেশ করেছ, হাঁটছি নাহয়  কয়েকটা দিন খুজে
তবু তুমি এসো আবার পথিক বন্ধু সেজে।

আজ থেকে

আজ থেকে রাত করে শোবো না,
রোজ রোজ হাত মুখ ধোবো না।
খুলব না চিঠি নীল খামটি,
কপালের ভাঁজে জমে ঘাম টি।
চোখ মেলে দেখব না দুনিয়া,
খাঁচা খুলে ছেড়ে দেব মুনিয়া।
শুনবো না একঘেঁয়ে রেডিও,
ঘুম পেলে মশারিতে সেধিও।
নাকফুল ঝিকমিক, ঘোর লাগা চারদিক,
রাতভর আড়মোড়া ভাঙব।
বৃষ্টির রিমঝিম, মাথাব্যাথা ঝিমঝিম,
দুই গাল লাল রঙে রাঙব।

আজ থেকে ঘুরবো না বাইকে,
তোর কথা বলে দেব মাইকে।
আজ আমি প্রেসিডেন্ট ক্যাস্ট্রো,
ছেড়া তবু পরনের বস্ত্র।
আজ আমি বাড়ি ফিরে যাব না,
অকারণে গাল ছুঁয়ে দেব না।
আজ থেকে নেই কোন কষ্ট,
আজ থেকে আমি পথ ভ্রষ্ট।

মুঠো ভরা গল্প,সুখ তাতে অল্প,
মানিব্যাগে ব্যাথা গুলো রাখব।
জ্বলজ্বলে জ্যোছনা, চোখ দুটো মুছোনা,
চল আজ রোদ গায়ে মাখব।

আজ আমার দিন গেছে থমকে,
সুতো কাটা ঘুড়ি গেল চমকে।
জোনাকির ঝাঁক আজ খুঁজিনি,
তোমারি চোখের ভাষা বুঝিনি।
চাঁদটাকে খুলে রেখে পকেটে,
ঘর বাঁধি দ্রুত গতি রকেটে।
আজ কোন বাঁধা নেই মনেতে,
ছুঁতো খুঁজে হাত দুটো ধরতে।
আধফোটা ফুলটা, শোধরানো ভুলটা,
তোমার স্পর্শ পেয়ে শুদ্ধ।
ফুটপাতে রোদ্দুর, চোখ যায় যতদূর,
ফিরবার পথ তবু রুদ্ধ..