Skip to main content

Posts

Showing posts from September, 2010

ছিন্নমুকুল

সবচেয়ে যে ছোট পিড়ি খানি সেখানি আর কেউ রাখেনা পেতে, ছোটথালায় হয় নাকো ভাতবাড়া জল ভরে না ছোট্ট গেলাসেতে । বাড়ির মধ্যে সবচেয়ে যে ছোট খাবার বেলা কেউ ডাকে না তাকে । সবচেয়ে যে শেষে এসেছিল, তারই খাওয়া ঘুচেছে সব আগে । সবচেয়ে যে অল্পে ছিল খুশি, খুশি ছিল ঘেষাঘেষির ঘরে, সেই গেছে হায়, হাওয়ার সঙ্গে মিশে, দিয়ে গেছে জায়গা খালি করে । ছেড়ে গেছে পুতুল, পুঁতির মালা, ছেড়ে গেছে মায়ের কোলের দাবি । ভয়ভরা সে ছিল যে সব চেয়ে সেই খুলেছে আঁধার ঘরের চাবি । হারিয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে ওরে ! হারিয়ে গেছে 'বোল' বলা সেই বাঁশি দুধে ধোওয়া কচি সে মুখখানি আঁচল খুলে হঠাৎ স্রোতের জলে ভেসে গেছে শিউলী ফুলের রাশি , ঢুকেছে হায় শশ্মান ঘরের মাঝে ঘর ছেড়ে হায় হৃদয় শশ্মানবাসী । সবচেয়ে যে ছোট কাপড়গুলি সেইগুলি কেউ দেয় না মেলে ছাদে, যে শয্যাটি সবার চেয়ে ছোট, আজকে সেটি শূন্য পড়ে কাঁদে । সবচেয়ে যে শেষে এসেছিল সেই গিয়েছে সবার আগে সরে । ছোট্ট যে জন ছিল রে সবচেয়ে, সেই দিয়েছে সকল শূন্য করে ।

সিগারেট

আমরা সিগারেট। তোমরা আমাদের বাঁচতে দাও না কেন? আমাদের কেন নিঃশেষ করো পুড়িয়ে? কেন এত স্বল্প-স্থায়ী আমাদের আয়ু? মানবতার কোন্ দোহাই তোমরা পাড়বে? আমাদের দাম বড় কম এই পৃথিবীতে। তাই কি তোমরা আমাদের শোষণ করো? বিলাসের সামগ্রী হিসাবে ফেলো পুড়িয়ে? তোমাদের শোষণের টানে আমরা ছাই হই: তোমরা নিবিড় হও আরামের উত্তাপে। তোমাদের আরামঃ আমাদের মৃত্যু। এমনি ক'রে চলবে আর কত কাল? আর কতকাল আমরা এমনি নিঃশব্দে ডাকব আয়ু-হরণকারী তিল তিল অপঘাতকে? দিন আর রাত্রি - রাত্রি আর দিন; তোমরা আমাদের শোষণ করছ সর্বক্ষণ আমাদের বিশ্রাম নেই, মজুরি নেই নেই কোনো অল্প-মাত্রার ছুটি। তাই, আর নয়; আর আমরা বন্দী থাকব না কৌটোয় আর প্যাকেটে; আঙুলে আর পকেটে সোনা-বাঁধানো 'কেসে' আমাদের নিঃশ্বাস হবে না রুদ্ধ। আমরা বেরিয়ে পড়ব, সবাই একজোটে, একত্রে- তারপর তোমাদের অসতর্ক মুহূর্তে জ্বলন্ত আমরা ছিট্‌কে পড়ব তোমাদের হাত থেকে বিছানায় অথবা কাপড়ে; নিঃশব্দে হঠাৎ জ্বলে উঠে বাড়িসুদ্ধ পুড়িয়ে মারব তোমাদের যেমন করে তোমরা আমাদের পুড়িয়ে মেরেছ এতকাল।।